• বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রিয়াদের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহের পথে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

চট্টগ্রাম টেস্টের পর মিরপুর টেস্টেও বেশ ভালোই শুরু করেছে টাইগাররা। প্রথ টেস্টে জিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর তার তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে ভর করেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে বাংলাদেশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উকেট হারিয়ে ৪৬৯ রান। ২০৭ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ১০৯ করেন রিয়াদ। তাইজুল ২৬*(৪৬)।

প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৫৯ রান। দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করছে টিম বাংলাদেশ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন অপরাজিত থেকে ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুরুতেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করেন সাকিব আল হাসান। এই দুজনের জুটিতে শতরানের বেশী রান এসেছে। আর দ্রুতই তিনশ’ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের রান। তবে সেঞ্চুরির পথে ছুটতে থাকা সাকিবকে ব্যক্তিগত ৮০ রানে গালিতে থাকা শাই হোপের ক্যাচে পরিণত করে এই জুটি ভাঙেন উইন্ডিজ পেসার কেমার রোচ।

আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফিফটি করেন লিটন। ৪১ থেকে অফ স্পিনার রোস্টন চেজকে ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে পৌঁছে যান ৪৭-এ। এক বল পরই কাভার দিয়ে চার হাঁকিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন মাইলফলক। ৫০ বলে ফিফটি করতে ৮টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

লাঞ্চের পর চতুর্থ ওভারে লিটন দাসের দারুণ এক ইনিংসের শেষ হয় বাজে শটে। লেগ স্টাম্প ফাঁকা রেখে অফ স্পিনার ক্রেইগ ব্রাফেটকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পায়ের পেছন দিয়ে বোল্ড। লিটন ৬৪ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৫৪ করে ফিরলে ভাঙে ৯২ রানের সপ্তম উইকেট জুটি।

ক্রেইফ ব্রাফেটকে সুইপ করে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার হাঁকান মেহেদী হাসান মিরাজ। এই চারে ৩৯৭ থেকে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ পৌঁছে গেল চারশর ঠিকানায়। এই নিয়ে তৃতীয়বার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারশ রান করল বাংলাদেশ। ২০০৪ সালে সেন্ট লুসিয়ার করেছিল ৪১৬ রান, আর ২০১২ সালে ঢাকায় সর্বোচ্চ ৫৫৬।

বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলতে চেয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু বল মিস করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডারদের কট বিহাইন্ডের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় তারা নেয় রিভিউ। আল্ট্রাএজে দেখা যায়, বল মিরাজের ব্যাট স্পর্শ করে গিয়েছিল। মিরাজ ২৬ বলে ২ চারে ১৮ রান করে ফেরেন।

প্রথম দিন টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। ওপেনিংয়ে নামেন সৌম্য সরকার এবং অভিষিক্ত সাদমান ইসলাম। শুরুটা বেশ ভালোই করে নতুন এই ওপেনিং জুটি। তবে দলীয় ৪২ রানের মাথায় রোস্টন চেজের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। বিদায়ের আগে এই বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। দলীয় ৮৭ রানের মাথায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায়। মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক শেষ বলের আগে অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন আগের দুই ম্যাচে টানা দুই সেঞ্চুরি করা মুমিনুল হক। কেমার রোচের বলে ব্যক্তিগত ২৯ রান করে রোস্টন রেচের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ৪৬ বল মোকাবেলা করে সেট হওয়া মুমিনুল। সাদমানের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। প্রথম সেশন শেষে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৮৭ রান।

দ্বিতীয় সেশনে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন মোহাম্মদ মিঠুন এবং সাদমান ইসলাম। এই জুটি থেকে আসে ৬৪ রান। দলীয় ১৫১ রানের মাথায় দেবেন্দ্র বিশুর বলে বোল্ড হন ২৯ রান করা মিঠুন। দলীয় ১৬১ রানের মাথায় বিদায় নেন অভিষিক্ত সাদমান ইসলাম (৭৬)। বিশুর বলে এলবির ফাঁদে পড়ার আগে ১৯৯ বল মোকাবেলা করে ছয়টি বাউন্ডারিতে এই ইনিংস সাজান বাঁহাতি ওপেনার। দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১৭৫/৪। প্রথম সেশনে সৌম্য সরকার, মুমিনুল হক বিদায় নিয়েছেন, দ্বিতীয় সেশনে বিদায় নেন মোহাম্মদ মিঠুন, সাদমান ইসলাম। তৃতীয় সেশন শুরুর কিছুটা সময় পর বিদায় নেন মুশফিক। দলীয় ১৯০ রানের মাথায় বাংলাদেশ পঞ্চম উিইকেট হারায়। লুইসের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১৪ রান।

এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে টেস্টে অভিষেক হয় তরুণ ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলামের। বিশ্রামে রাখা হয়েছে ওপেনার ইমরুল কায়েসকে। বাদ পড়েছেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, দলে এসেছেন লিটন দাস। এই প্রথম কোনো পেসার ছাড়া একাদশ সাজিয়েছে টাইগাররা।

চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬৪ রানের ব্যবধানে। নিজেদের খেলা সবশেষ ৫ টেস্টে টানা দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ আর টানা তিনটিতেই হেরেছে ক্যারিবীয়ানরা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুই ম্যাচের সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে চোট পেয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার বদলে নেতৃত্বভার পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করেছিলেন সাকিব। ৯ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও ধবলধোলাইয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –