• মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১ ১৪৩১

  • || ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

একাধিকার প্রযুক্তি শিল্পে!

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৮  

কয়েক বছর আগে আমাজন আসার আগে আমাদের জীবন কেমন ছিলো? ভেবে দেখুন তো! কিংবা ভাবুন হ্যাশট্যাগ মি টু এর আগেই বা কেমন ছিলো প্রত্যাহিক জীবন।মার্কিন সিলিকন ভ্যালি কোম্পানিগুলোর কথাই ধরুন, যাকে বলা হয় মার্কিন অর্থনীতির মুকুটের রত্ন।সিলিকন ভ্যালি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো এলাকার সমুদ্র উপকূল এলাকা আর এই জায়গাটি দুনিয়ার নামি দামি প্রযুক্তি কোম্পানি দিয়ে ভরা। এই কোম্পানিগুলো সবসময়ই উদ্যমী ছিলো। বিশ্ব বাণিজ্যে তাদের নিজেদের হাত ঢুকিয়ে আয় করে নেয়ার অভিনব ও অসাধারণ যে কৌশল তারা প্রয়োগ করেছে তা অভাবনীয় ও আশ্চর্যের। এদের সকলেরই কৌশল ছোট ছোট পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে শুরু। যেমন- সকলের চাহিদা নিয়ে ভাবা, বর্তমান বাজারের চাহিদা জানা, এসব ছোট ছোট কৌশল রপ্ত করে বাণিজ্যে সাফল্য লাভ। এই প্রতিটি কোম্পানির নির্মাতারা একেকজন কিংবদন্তি।

 

1.প্রযুক্তি শিল্পে একাধিকার!

বিগত দুই তিন সপ্তাহ যেনো হয়ে উঠেছে গত দুই বছরের ক্ষুদ্র এক প্রতিচ্ছবি। প্রথমে মার্কিন জনপ্রিয় পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপানো একটি আর্টিকেলের পরই তা সকলকে কাঁপিয়ে দেয়। আর্টিকেলটি ছিলো গুগল কোম্পানিতে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি কেন্দ্রিক। যেখানে দায় উঠেছে গুগলের বর্তমান সিইও লেরি পেজের উপরও। এই ঘটনার পরে আমাজন তাদের নিজদের নতুন হেডকোয়ার্টার খোলে। এটি নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি। সবচেয়ে কাপিয়ে দেয়া খবর আসে গতকাল যখন একই পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস ফেসবুকের ডাটা শেয়ারিং ঘটনা নিয়ে আরেকটা প্রতিবেদন ছাপে। প্রতিবেদনে ফেসবুকের অনিয়ন্ত্রিত ডাটা শেয়ারিং এর জন্য ভবিষ্যৎ এর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।

 

2.প্রযুক্তি শিল্পে একাধিকার!

বর্তমানে প্রযুক্তির শিল্প বাণিজ্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র থেকে হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্রে পরিণত হওয়ার অবস্থায় দাড়িয়েছে। সকলেরই জনপ্রিয় সিলিকন ভ্যালি কোম্পানিগুলো আজ পুরানো কোনো এক তেল কোম্পানির মতো ময়লাযুক্ত হয়ে গেছে। ২০১৬ এর মার্কিন নির্বাচনের পর থেকে অনেক ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে ফেসবুকের সঙ্গে। অন্যান্য বড় বড় জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ইন্সটাগ্রাম কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ এখন ফেসবুকের মালিকানায়। তবে নিজস্ব স্বকীয়তা না থাকায় অন্য সব কোম্পানির নির্মাতারা পদত্যাগ করেছেন। সকলের শেষে পদত্যাগ করলেন ইন্সটাগ্রামের নির্মাতা মাইক ক্রেইগার ও কেভিন সিসট্রোম। বর্তমানে ফেসবুক তাদের মালিকানায় থাকা অন্যান্য মাধ্যমগুলোর কোনো নির্মাতাই নেই।

 

3.প্রযুক্তি শিল্পে একাধিকার!

তাই ফেসবুক এখন একটি ইনকোর্পোরেটেড কোম্পানি হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু এতো কিছুর পরও কোথায় গিয়ে এই প্রযুক্তি শিল্পের বাজে দিন শেষ হবে তা বলা মুশকিল! আর যদি এই পরিস্থিতি খারাপ চলতেই থাকে তারপরেও যদি এসব যারা ব্যবহার করেন তারা নিজেদের অব্যহতি দিতে না পারেন তাহলে কি হবে? ইতিহাসের মতে, একসময় মার্কিনীরা আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথকে উপভোগ করত যেমন আমরা বর্তমানে ইন্টারনেটকে করি। সে সময় অনেকেই বলতো আধুনিক মার্কিন শুরু হবে সেই আন্তঃমহাদেশীয় রেলপথ ধরেই।পরবর্তীতে, এই রেলপথের ইন্সটিটিউট মানুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় যার কারণে “monopoly” তথা একাধিকার শব্দটি হয়ে উঠেছিলো খুবই ভনায়ক একটি শব্দ।পরবর্তীতে এই একাধিকারে থাকা সেই রেলপথ ইন্সটিটিউটটি লবিং-এর জন্য কুখ্যাত হয় আর তা খুবই ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে উঠে।

 

4.প্রযুক্তি শিল্পে একাধিকার!

বর্তমানে যারা ইন্টারনেটের সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য অনেক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন যেমন: মার্ক জুকারবার্গ, জেফ বেজোস, লেরি পেজ, সার্জি ব্রিন-রা সেই আন্তঃ মহাদেশীয় রেলপথের ঘটনার মতো পথেই হাঁটছেন।কারণ তাদের সকলের তৈরি প্ল্যাটফর্মে তারা একাধিকারের বড় প্রয়োগ করে চলছেন। তারা হতে চলেছেন সেই আন্তঃ মহাদেশীয় রেলপথের ঘটনার দ্রুত সংস্করণ। যদিও ইনারা তাদের কোম্পানী তৈরীর পর অনেক বড় বিপর্যয়ও দেখেছেন।কিন্তু তারা কেউই থেমে থাকেননি। নিজেদের ব্যক্তিগত ভাগ্যের সর্বোচ্চটুকু ব্যবহার করে তারা আজ নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিতে সক্ষম হয়েছেন। মার্ক জুকারবার্গের সম্পত্তির পরিমাণ ৫৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার, যেখানে লেরি পেজের ৫১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ও বেজোসের ১৩৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এখন তাদের যা-ই হোক না কেনো তারা বিশ্বে নিজদের ভিন্ন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করেছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –