• বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সরিষা তেলের জাদু

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০১৮  

প্রত্যেক বাঙালীর ঘরেই সরিষা তেলের উপস্থিতি রয়েছে। রান্নাঘরে আর যাই থাকুক না কেন, এই তেল থাকবেই। শুধুমাত্র বিভিন্ন রান্নাতে ব্যবহার করা ছাড়াও ইমিউনিটি বাড়ানো, ঠান্ডার চিকিৎসা করা, ত্বক মসৃণ করা এবং সর্বোপরি চুলের বিভিন্ন উপকারে লাগে সরিষার তেল। নবজাতক কিংবা শিশুদের চুলে সরিষার তেল দেয়া হলেও বড়দের পছন্দ নারকেল তেল। তবে এই তেল চুলের সুরক্ষায় জাদুকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। লম্বা চুল সকলেরই পছন্দের। কিন্তু চুল কীভাবে লম্বা করে তুলবেন তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। দূষণ, জল, রাসায়নিক ইত্যাদির প্রভাবে চুল রুক্ষ, শুষ্ক হয়ে যায়। কিন্তু সরিষার তেল নিয়মিত ব্যবহারে সে সব সমস্যা থেকে নিমিষেই মুক্তি পেতে পারেন। এই তেলে উপস্থিত উপাদান চুল করে তোলে স্বাস্থ্যজ্জ্বল, মসৃণ এবং সুন্দর।

চুলের সুরক্ষায় যেভাবে কাজ করে সরিষার তেল তা জেনে নিন-

১. প্রাকৃতিক কন্ডিশনার: সরিষার তেলে আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা চুল সুন্দর, স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখে। এছাড়া আলফা ফ্যাটি অ্যাসিড দারুণ কন্ডিশনারের কাজ করে। ফলে চুল দ্রুত বৃদ্ধি হয়।

২. পুষ্টি বৃদ্ধি করে: চুল পড়া খুবই সাধারণ সমস্যা। এর কারণ চুলের ফলিকল দুর্বল হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়া হতে পারে। চুলে নিয়মিত সরিষার তেল মালিশ করলে ফলিকল মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে।

৩. ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: সরিষার তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি মিনারেল এবং ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে থাকে। এছাড়াও থাকে জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন ও সেলেনিয়াম যা চুল লম্বা হতে সাহায্য করে।

৪. রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে: চুল রুক্ষ, শুষ্ক, নিষ্প্রাণ হয়ে গেলে নিয়মিত মাথার তালুতে সরিষার তেল মালিশ করুন। এর ফলে মাথার তালুতে রক্ত সঞ্চালন ঠিক ভাবে হবে এবং চুলের গোড়া মজবুত হয়ে চুল পড়া বন্ধ হবে।

৫. চুল বৃদ্ধিতে সহায়ক: সরিষার তেলে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা চুল বড় হতে সাহায্য করে।

৬. অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান: এই তেলে অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান থাকায় তা চুলের খুশকি ও চুলকানি দূর করে। ফাঙ্গাসে চুলের গোড়া বুজে গিয়ে চুল পাতলা হয়ে যায়। সে সমস্যা সমাধান করে সরিষার তেল।

এবার জেনে নিন চুল বড় করতে কীভাবে সরিষার তেল ব্যবহার করবেন-

১. টকদই ও সরিষার তেলের মিশ্রণ: টক দইয়ের সঙ্গে তেল মিশিয়ে মাথার তালুতে ভালভাবে লাগান। গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে সেটি মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালভাবে ধুঁয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক বা দু'বার প্রায় একমাস এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন আর ফলাফল দেখুন!

২. সরিষার তেল ও অ্যালোভেরার মিশ্রণ: সরিষার তেল ও অ্যালোভেরা মেশান। মাথার তালুতে ভালভাবে মিশিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুঁয়ে ফেলুন। ভাল ফল পেতে সপ্তাহে দুই দিন এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন। এই মিশ্রণ চুল মসৃণ ও স্বাস্থ্যজ্বল করবে ও চুল পড়া বন্ধ করবে।

৩. লেবুর রস ও সর্ষের তেলের মিশ্রণ: একটা বাটিতে তেল, লেবুর রস ও ধনে গুঁড়ো নিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে মাস্ক হিসাবে চুলে নিয়মিত মাখুন। আধ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুঁয়ে ফেলুন। এর ফলে চুল কন্ডিশন হবে, মজবুত হবে এবং খুশকি দূর হয়ে চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৪. কলা ও সর্ষের তেলের মিশ্রণ: একটা কলা চটকে নিয়ে সঙ্গে তেল ও দই মেশান। মিশ্রণটা ভালভাবে মাথার তালুতে লাগান এবং আধ ঘন্টা পর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ধুঁয়ে ফেলুন। এরপর হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবেন না। এই মিশ্রণটা আপনার চুল মসৃণ, উজ্জ্বল, মজবুত ও নরম করে তুলবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –