• বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

১০১ বছর বেঁচে থাকবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

ড. ডন হারপার। যুক্তরাজ্যের অত্যন্ত সুপরিচিত একজন চিকিৎসক তিনি। মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন এরই মধ্যে। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান দর্শকদের কাছে বেশ প্রশংসিতও হয়েছে। সম্প্রতি তিনি একটি বই লিখেছেন। তার নাম দিয়েছেন ‘১০১ বছর সুস্থ হয়ে বাঁচুন’।

সেই বইয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন দীর্ঘ আয়ুর জন্য কিছু নির্দেশনা।  পাঠকদের কাছে আমরা তুলে ধরতে চায় তার সে সব টিপস। যা অনুসরণ করে হয়ত আপনিও দীর্ঘায়ু হতে পারেন। তার দেয়া সাতটি টিপস হলো:

১. ঠিক মতো ঘুমান

দিনে ঠিক ঘুমান কিনা এবং সে ঘুম আপনার সু-স্বাস্থ্যের জন্য পরিপূরক হচ্ছে কিনা, তা দেখা খুব জরুরী। বিশেষ করে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি ঘুমও যেমন খারাপ তেমনি অল্প ঘুমও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ড. হারপার বলছেন, সেকারণে ঠিকঠাক মতো ঘুমাতে হবে।

২. হাঁটাচলা করুন

আমাদের অনেকেই প্রচুর সময় বসে বসে কাটাই। যেটা আমাদের শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়। সুসংবাদ হচ্ছে যে, এজন্যে আমাদের ম্যারাথন রানার হতে হবে না তবে শরীরটাকে একটু নাড়াতে হবে- মানে হাঁটাচলা করতে হবে।

ড. হারপার তার বই লিখতে গিয়ে এরকম বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন যারা এক শতাব্দী কাল ধরে বেঁচে আছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সবার মধ্যেই একটি জিনিসের বেশ মিল। সেটা হলো তারা কিন্তু কোন ক্লাসে যায়নি, কিম্বা স্কোয়াশ খেলতেও যায়নি, তবে তারা প্রচুর হেঁটেছেন।

৩. আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিন

শরীরকে সচল রাখতে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হয় লিভারের প্রতি। কোন কারণে এটি অচল হয়ে পড়লে মৃত্যু অবধারিত। সে জন্য শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ন্যায় লিভারের প্রতি গুরুত্বটা আরো বেশী দিতে হবে।

তবে অনেকে মনে করেন, এক গ্লাস রেড ওয়াইন হয়তো খুব আনন্দের কিছু। কিন্তু ড. হারপার বলছেন, লিভারকে সচল রাখতে প্রতিদিন সন্ধ্যায় পান করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।

৪. আপনার জিন সম্পর্কে জানুন

বিশেষ কোন অসুখে পড়ার আগে নিজের জিন সম্পর্কে জানা বেশ প্রয়োজন। ড. হারপার বলছেন, আপনার পরিবারের বা বংশের অন্যান্য সদস্যদের অসুখ বিসুখের ইতিহাস জানা থাকলে সেটা আমাদেরকে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করতে সাহায্য করতে পারে।

তিনি মনে করেন, জিন যে শরীরে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন কোন জিনের কারণে আমরা বিশেষ একটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছি সেটা জানলে আমাদের সুবিধা হবে। সুস্থ থাকতে সহজ হবে। হৃদরোগের কথাই ধরুন। আমি তো আর আমার জীবন নিয়ে যন্ত্রণায় ভুগতে চাই না। কিন্তু আমি হয়তো এক্স এবং ওয়াই ক্রোমোজোম সম্পর্কে আরো একটু সচেতন হতে পারি।

৫. কার্বোহাইড্রেটের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে

ভাত ও রুটির মতো কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার পরিহার করা আজকালকার দিনে হয়তো অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, ব্যালেন্সড ডায়েটের জন্যে আমাদেরকে এসব খেতেও হবে আবার পরিহারও করতে হবে। তবে খুব বেশি আনন্দিত হবার কিছু নেই। এখানেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

আমি সবসময় রিফাইন বা মসৃণ কার্বোহাইড্রেট না খেয়ে বরং একটু জটিল ধরনের (মোটা আটার) খাওয়ার কথা বলবো। যেমন বাদামী চাল, আস্ত শস্য দানা সমেত মোটা আটার রুটি।

৬. প্রতিদিন হাসুন

সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরী, প্রতিদিন হাসা। এটা সকলের মনে রাখতে হবে। এটাকে দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজের অংশ হিসেবে মনে করতে হবে। ড. হারপার বলেন, এজন্যে ইতিবাচক মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৭. চাপমুক্ত থাকার রাস্তা খুঁজে বের করুন

আমাদের অনেকেই নানা রকমের স্ট্রেসের মধ্যে থাকি বা মানসিক চাপে ভুগি। এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর। সেটা শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে।

আজকের দিনে নানা কারণে স্ট্রেসের সৃষ্টি হয়। সেটা কাজের কারণে হতে পারে, সম্পর্কের কারণেও হতে পারে এবং পারিবারিক কারণেও হতে পারে। কিন্তু এসব চাপ থেকে কীভাবে মুক্ত থাকা যায় তার উপায় প্রত্যেককে আলাদা আলাদা করে খুঁজে নিতে হবে। কারণ একেকজনের বেলায় এটা একেকভাবে কাজ করে। ড. হারপারও তাই মনে করেন।

এজন্যে একজন চিকিৎসক কিম্বা এ সংক্রান্ত অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছ থেকে সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –