• শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৪ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সন্তানকে বিজ্ঞানমনা করতে

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০১৮  

এটি মূলত একটি ব্রেইন টিজার গোত্রের খেলনা। শিশুদের মাঝে যুক্তিবোধ গড়ে তুলতে এ ধরনের ব্রেইন টিজার গেম তৈরি করে হয়। চাইলে আপনিও কার্ডবোর্ডের সাহায্যে নিজেই তৈরি করে ফেলতে পারেন চমৎকার একটি পাজল গেম। সময়টা যেমন ভালো কাটবে, ঠিক তেমনি আনন্দের সঙ্গে মেধারও বিকাশ ঘটবে।

মানুষ তৈরি করতে পছন্দ করে। আর ছোট বাচ্চারা তো কিছু একটা নিজের চেষ্টায় তৈরি করতে পারলে মনে করে যেন পৃথিবী জয় করেছে! আইকিউ বিল্ডার তাই হতে পারে সেক্ষেত্রে একটি আদর্শ খেলনা। বিভিন্ন আকার আকৃতির নানা ধরনের খেলনা তাদের মস্তিষ্ককে করে তুলবে ক্ষুরধ

মেয়েকে জন্মদিনে ডলস হাউজ কিনে দেবার কথা ভাবছেন? ছেলের জন্য রিমোট কন্ট্রোলড গাড়ি? তা না করে তাদের হাতে তুলে দিন ইলেকট্রনিক স্মার্ট হাউজ। এখানে পাবেন একটি বাড়িতে কেমন করে বৈদ্যুতিক লাইন কাজ করে, মোশন সেন্সর, বৈদ্যুতিক বাতির কাজ এবং এলিভেটর তৈরির কারসাজি। মিনিয়েচার গোছের এই স্মার্ট হাউজ আপনার সন্তানকে বলবে কীভাবে বিদ্যুৎ কাজ করে এবং মৌলিক কিছু বিষয় সম্পর্কে ধারণা দেবে। এখানে পাবেন একটি রঙিন বই, যার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজেক্ট সম্পন্ন করে দেবার কথা বলা আছে। নিজেও বসে যান, সন্তানের সঙ্গে তৈরি করুন একটি আদর্শ ঘরের মডেল

একটি সাবান কীভাবে তৈরি করা হয়, তা কি আপনার সন্তান জানে? বিজ্ঞান কিন্তু সে প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছে খেলার ছলে। সাবানের টুকরো গলিয়ে নতুন করে ছাঁচ তৈরির মাধ্যমে শেখা যাবে সাবান প্রস্তুত প্রক্রিয়া। বাচ্চাদের আকর্ষণ করবে এমন সব ডিজাইনে এই ছোট ছোট সাবানের মডেল দেয়া আছে। নতুন নতুন রঙ, ছাঁচ, গন্ধ এবং স্টিকার সংবলিত সাবান তৈরি করা যাবে নিমিষেই। হাতের চামড়ারও কোনো ক্ষতি হবে না।

ছোটদের আকর্ষণ করার জন্য এটি একটি চমৎকার খেলনা। গ্যাসের বেলুন কিনে না দেয়া বাচ্চাদের বার্নোলি বেলুনের কার্যক্রম দেখান। নিশ্চিত, তারা তাজ্জব হয়ে যাবে। এটি মূলত সৌরশক্তির সাহায্যে পরিচালিত একটি বেলুন। শুধু সূর্যের আলো পেলেই এই বেলুন ফুলে ওঠে পঞ্চাশ ফিট পর্যন্ত! আপনার ছোট বিজ্ঞানী শিশুটি জানতে পারবে প্লবতা, তাপগতিবিদ্যা, পরিচলন এবং সূর্যের আলোক সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা।চমকে ওঠার কোনো কারণ নেই। দূরবীন না কিনে দিয়ে সন্তানের হাতে তুলে দিন অণুবীক্ষণ যন্ত্র। টাকা একটু বেশি লাগতে পারে (তবে ঢাকায় ৫ হাজার টাকার মধ্যে বেশ ভালো মানের মাইক্রোস্কোপ পাওয়া যাবে), তবে এটির পরবর্তীতে যে সুফলটি পাওয়া যাবে, তা দেখে আপনি তাজ্জব হয়ে যাবেন। ছোট বাচ্চাদের রঙিন জগত খুবই আকর্ষণ করে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল, ছত্রাক, গাছের পাতা, ছোট ছোট ফল ফুলের কোষ ইত্যাদি স্লাইডে এনে তারা আবিষ্কার করতে পারে এক নতুন জগত।

পিঁপড়া অত্যন্ত পরিশ্রমী প্রাণী। অনেকেই উপদেশ দিয়ে থাকেন জীবনের কর্মব্যস্ততা বলতে কী বোঝায়, তা পিঁপড়া এবং মৌমাছির থেকে শেখা যায়। আচ্ছা, আপনার বাচ্চা যদি কোনো প্রাণী পুষতে চায় তবে তাকে পিঁপড়াই কিনে দিন! এই ইল্যুমিনেটেড এন্টওয়ার্কস ফার্ম আপনার বাচ্চাকে শেখাবে একদম পিঁপড়ে কেমন করে তাদের জীবন কাটায়, কেমন করে তারা একত্রে কাজ করে। এই কৃত্রিম ফার্মে রয়েছে রিমুভেবল এলইডি বাতি এবং পাওয়ার এডাপ্টার, নিউট্রিয়েন্ট জেল, ম্যাগনিফাইং গ্লাস, জুম লেন্স এবং পিঁপড়া ধরার জন্য টানেল। এর মাধ্যমে আপনার সন্তান বাড়ির পিঁপড়াগুলো ধরে খুব সহজেই তাদের জীবনধারণ প্রক্রিয়া দেখতে পারবে

মাব শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেমন এবং বিভিন্ন অঙ্গ কীভাবে কাজ করে, তা জানার জন্য ডাক্তার হবার প্রয়োজন নেই। হিউম্যান এনাটমির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তারা জানতে পারবে এই খেলনার সাহায্যে। এছাড়াও এটি খুলে খুলে দেখা যায় এবং নতুন করে সাজানোও যায়। অর্থাৎ, মানবদেহ কীভাবে কাজ করে সেটা জানার পাশাপাশি এটিকে পাজল হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবে তারা। এই খেলনার সুবিধার জন্য সঙ্গে দেয়া আছে মানানসই টুইজার এবং ফোরসেপ।

এই পাজল গেমটি খুব মজার ও শিক্ষনীয়। পর্যায় সারণিতে যেসব মৌল রয়েছে, তাদের সম্পর্কে সহজেই জানা যাবে এই খেলনাটির মাধ্যমে। পটাশিয়ামের পর সোডিয়াম নাকি ক্যালসিয়াম, তা বুঝতে পারা যাবে সহজেই। এছাড়াও প্রতিটি মৌলের সঙ্কেত, তাদের আণবিক ভর, পারমাণবিক ভর ইত্যাদিও দেয়া আছে কাঠের ছোট ছোট এই ব্লক পাজলে।

এই খেলনাটিও বেশ মজার। ধরুন সন্তানকে টাকা দিতে চাচ্ছেন কিছু কেনার জন্য। কেন না তাকে সেটি অর্জন করতে শেখান? পাজল পড আপনাকে দেবে সে সুবিধা। এই পডের পেছনে টাকা রেখে সেটি যেকোনো কোডের মাধ্যমে লক করে দিন। একটি বর্ণের সঙ্গে আরেকটি বর্ণ মেলাতে মেলাতে যখন কোড উন্মুক্ত হয়ে যাবে, তালাটি আপনাতেই খুলে যাবে। কোড ভেঙে গুপ্তধন প্রাপ্তির মজাই তো আলাদা, তাই না?

আপনি চাইলে এই কার্ডগেমগুলো বাজারে কিনতে পারবেন কিংবা বাচ্চার বয়স অনুযায়ী মানানসই করে নিজেই তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও তৈরি করতে পারেন বিভিন্ন ধরনের কুইজ কার্ড। বিজ্ঞানের ছোট ছোট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিজেই তার জন্য তৈরি করতে পারেন। কাগজ কিংবা একটু মোটা ধাঁচের আর্ট পেপারে তৈরি করতে পারেন বিষয়ভিত্তিক কুইজ কার্ড। শেখার সঙ্গে শিশু পাবে অন্যরকম একটি আনন্দ।

এদেশে অন্যরকম বিজ্ঞান বাক্স নামে একটি মজাদার বাক্স পাওয়া যায়। এটিও তুলে দিতে পারেন সন্তানের হাতে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নের খুঁটিনাটি মৌলিক বিষয়গুলো বেশ আনন্দের সঙ্গে জেনে নেয়া যাবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –