• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুল হয়ে শূন্য আসনে শহিদ আহনাফ

প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২৪  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে আগের মতো সবাই ক্লাসে ফিরেছে। তবে সহপাঠীদের প্রিয় আহনাফ (১৭) পাড়ি দিয়েছে না ফেরার দেশে। কারণ, ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে সে গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ঘটনাস্থলেই শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করে আহনাফ।

রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজে রোববার থেকে শুরু হয়েছে স্থগিত হওয়া একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। সব শিক্ষার্থীই এলেও শুধু আহনাফের আসনটি ফাঁকা ছিল। তাকে স্মরণ করে তার বসার টেবিলে রাখা হয় একটি ফুলের তোড়া। আর কাগজে লেখা- ‘শাফিক উদ্দিন আহম্মেদ আহনাফ’। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ নিয়ে বিএএফ শাহীন কলেজের উপাধ্যক্ষ শাকিলা নার্গিস বলেন, শিক্ষকদের মনে হয়েছে, তার স্মরণে কিছু করা উচিত। আহনাফের প্রতি ভালোবাসা থেকে শূন্য আসনটিতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুল রাখা হয়েছে।

আহনাফের পরিবার রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের মধ্য পাইকপাড়া এলাকায় বাস করে। তার বাবা নাসির উদ্দিন আহমেদ ও মা সাফাক সিদ্দিকী। তাদের দুই ছেলের মধ্যে আহনাফ ছিল বড়। ছোট ছেলে ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।

আহনাফের বাবা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, সে সব সময় বলত, বড় হয়ে এমন কিছু করবে, যার জন্য পরিবারের সদস্যরা গর্ব করবেন। সে ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সোচ্চার ছিল।

তিনি আরো বলেন, সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তার ছেলের শূন্য আসনে ফুলের তোড়ার ছবিটি অনেকে ‘শেয়ার’ করেছেন। আহনাফের মা সে কথা তাকে জানান। এরপর থেকে আহনাফের মা শুধুই কাঁদছেন।

গুলিবিদ্ধ হয়ে আহনাফ যেদিন নিহত হয়, সেদিন ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ঠেকাতে আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক শক্তিকে মাঠে নামিয়েছিল। মিরপুর-১০ নম্বরে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাদের কারো কারো হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। যদিও ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে তারা কয়েক ঘণ্টা পর মাঠছাড়া হন।

৪ আগস্ট সারা দেশে অন্তত ১১১ জন নিহত হন। সেদিন মিরপুরে কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তাদের একজন আহনাফ। এর একদিন পরই অর্থাৎ ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –