• রোববার ২৭ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ১০ ১৪৩১

  • || ২২ রবিউস সানি ১৪৪৬

বাংলাদেশে কখন কোথায় আঘাত হানবে বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘রোমাল’

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৪  

দেশের ৫৮টি জেলার ওপর দিয়ে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বুধবার থেকে আবার দেশের পাঁচ বিভাগের ওপর দু’দিনের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। কম বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে আগামী শনিবার অবধি। এরই মধ্যে বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির খবর জানা গেছে। এটির নাম হবে ‘রোমাল’। এর নামকরণ করেছে ওমান।

শক্তিশালী এ ঘূর্ণিঝড়টি চলতি মাসের শেষের দিকেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস ।

বঙ্গোপসাগরে এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টির আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে; যা আগামী ২০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টির অভিমুখ কিংবা গতিপথ কোনদিকে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের।

চার বছর আগে, অর্থাৎ ২০২০ সালের মে মাসেই ২০ তারিখে দেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। বেশ বিধ্বংসী ছিল ঘূর্ণিঝড়টি। তবে সুন্দরবনের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিল দেশের উপকূল।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রেমাল ও আম্ফানের মতো বিধ্বংসী হতে পারে। তবে এটির শক্তি কতটুকু; শেষ পর্যন্ত সুপার সাইক্লোনে রূপ নেবে কি না, তা জানতে আরো কিছুটা সময় লাগবে।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী— আগামী ২০ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সেটি সোজা উত্তর দিকে শক্তিবৃদ্ধি করবে। ২৪ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। ২৫ মে সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসতে পারে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় মূলত বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ও শেষ হয়ে যাওয়ার পরে। বাংলাদেশের ওপর মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হয় সাধারণত ৩০ মের পর থেকে ৭ জুনের মধ্যে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগের ঘূর্ণিঝড় মৌসুম মার্চ মাসে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে কোনো ঘূর্ণিঝড়-নিম্নচাপ কিংবা লঘুচাপও সৃষ্টি হয়নি। তাই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি যেহেতু ২০ মের পরে সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাই এটি খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি ও শক্তিশালী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চারটি প্রধান উপাদানের মধ্যে এরইমধ্যে তিনটির উপস্থিতি রয়েছে মধ্য ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে।

এই আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল বিশ্লেষণ করে জানান, ২০ থেকে ২৭ মের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের প্রবল আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ২০ মে থেকে এই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ স্পষ্ট হতে পারে। তবে কোথায়, কত গতিতে এটি আঘাত হানতে পারে– তা এখনই বলা যাচ্ছে না। অনুমান করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের মধ্যে কোথাও এটি আছড়ে পড়তে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ২৪ মে রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হতে পারে উপকূল এলাকায়। বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ মে পর্যন্ত।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –