• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

তিস্তার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই, ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় বাড়ছে পানি

প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২৪  

বিগত কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

এছাড়া জেলার ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি ধীরগতিতে বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে এরইমধ্যে জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তার অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। 

গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শনিবার বেলা ১২ টায় কাউনিয়া পয়েন্ট তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জেলার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেন্টিমিটার‌ ও করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পানি বৃদ্ধির ফলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি চরে অব্যাহত ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে তোষাপাটসহ বিভিন্ন ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে উপজেলার কাপাশিয়া, হরিপুর, শ্রীপুর ও চন্ডিপুর ইউনিয়নে অন্তত অর্ধশতাধিক বিঘা ফসলি জমি এরইমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে। নৌকা ছাড়া এক চর থেকে অন্য চরে যাওয়া আসা করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি  ইউপির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদী। প্রতিবছর তিস্তায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় নদী ভাঙন। যা চলতে থাকে সারা বছর। এ কারণে প্রতি বছর অন্তত সহস্রাধিক বসতবাড়ি ও  শত শত একর ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে।

কাপাসিয়া ইউপির ভাটি কাপাশিয়া গ্রামের সেলিম মিয়া জানান, হঠাৎ করে গত ১০ দিন ধরে তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে অনেক কৃষকের তোষাপাটসহ বিভিন্ন ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। 

তিনি বলেন, নদীতে পানি বাড়লে এবং বন্যা আসলে তিস্তার চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না।

শ্রীপুর ইউপির উত্তর শ্রীপুর গ্রামের নবিজল মিয়া বলেন, প্রতিবছর নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদী জমি বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। ফলে চরবাসীকে একাধিকবার ঘরবাড়ি সরাতে হচ্ছে। কিন্তু আজো স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মন্ডল জানান, তারাপুর, বেলকা, চন্ডিপুর, কাপাসিয়া ও হরিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন নদীভাঙন শুরু হয়েছে এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত লিখিতভাবে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাওয়া যায়নি। তালিকা পেলে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক জানান, উজানের ঢলে গাইবান্ধার সবগুলো নদ-নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরইমধ্যে সুন্দরগঞ্জের তিস্তার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। তবে দু একদিনের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –