• রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৭ ১৪৩১

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

উত্তরাঞ্চলের কৃষিতে পথ প্রদর্শক হবে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৩  

 
২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে এক জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গা পীড়িত কুড়িগ্রাম জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ শিল্পাঞ্চল ও নদী ড্রেজিং এর প্রতিশ্রুতি দেন।তারই প্রেক্ষাপটে উনার নিজস্ব চিন্তা থেকে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকল্পে এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ইনকিউবেটরের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে কৃষি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করা এবং পার্শ্ববর্তী জেলা গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী এলাকার জমির জন্য গবেষণা ও কন্টাক্ট ফার্মিং এর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়।

কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের অথার্য়নে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে ২১ ডিসেম্বর ২০২০ এ বিশ্ববিদ্যালয় ‘কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২০’ এর খসড়া অনুমোদন করে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যতিনেরহাট নামক এলাকার নিকটবর্তী বেলগাছা ও মোগলবাসা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী নালিয়া দোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম জাকির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।

জাকির হোসেনের ভাষ্য, উত্তরাঞ্চলের কৃষি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সে ক্ষেত্রে এ বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে নিঃসন্দেহে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী যাতে এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিতি লাভ করে, সে জন্য কোর্স, কনটেন্ট ও কারিকুলাম সেভাবেই প্রস্তুত করা হবে। বিশেষ করে কুড়িগ্রাম অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি, খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা ও কৃষি ওপর ভিত্তি করে নতুন ধরনের বিভাগ চালু করা হবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যাতে সরাসরি গবেষণায় নিয়োজিত থাকেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু চাকরি নয়, শিক্ষার্থীরা ভালো গবেষণা করে যাতে সারা বিশ্বে কৃষি উন্নয়নে কাজ করতে পারেন, কৃষকদের সম্পৃক্ত করে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেন, সেই শিক্ষা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এ কে এম জাকির হোসেন। তাঁর চাওয়া, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড বিজনেস কমিউনিকেশন, রিনিউঅ্যাবল এনার্জি অ্যান্ড গ্রিন টেকনোলজি, জিওইনফরমেটিকস অ্যান্ড ন্যানোটেকনোলজি, ফুড সেফটিসহ বিভিন্ন বিষয় সংযুক্ত করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের কৃষির রূপান্তরগুলো শিক্ষা দেওয়া যায়।

উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের গোড়া থেকেই এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি অ্যাটাচমেন্ট, ফারমার ফিল্ড অ্যাটাচমেন্ট, প্রজেক্ট ওয়ার্ক ও ইন্টার্নশিপে সম্পৃক্ত করা হবে।

কৃষিবিদ, পিএইচডি ড. মো. সহিদুল হক তাঁর এক লেখায় বলেন, ‌‌বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এই স্বাধীনতা তখনই আমার কাছে প্রকৃত স্বাধীনতা হয়ে উঠবে যেদিন বাংলাদেশের কৃষক-মজুর ও দুঃখী মানুষের সব দুঃখের অবসান হবে’। দারিদ্র্যপীড়িত কুড়িগ্রামকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলাই হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল লক্ষ্য। কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে ও সুদক্ষ প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন স্যারের হাত ধরে এই জেলাসহ পুরো উত্তরবঙ্গ আরো ব্যাপকভাবে উদ্ভাসিত হবে বলে কুড়িগ্রামবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –