• সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিনাজপুর-৬: আওয়ামী লীগে মনোনয়নপ্রত্যাশী ৬ জন

প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২৩  

 
হাকিমপুর, ঘোড়াঘাট, বিরামপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত দিনাজপুর-৬ আসন। এই আসনটি দীর্ঘদিন থেকেই বিএনপি-জামায়াতের আসন হিসেবে পরিচিত। তবে গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত আসনটি নিজেদের দখলে  রেখেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। মাঝে দীর্ঘ সময় ঘুমঘুম ভাবে চললেও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরব হয়ে উঠেছে বিএনপি ও জামায়াত। মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

দিনাজপুর-৬ আসনটি থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় ছয়জনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হচ্ছেন-বর্তমান সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, সাবেক সংসদ সদস্য ড. আজিজুল হক চৌধুরী, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মণ্ডল এবং ভারপাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ কবীর।

এখনও পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মতবিনিময় সভা, কর্মী সমাবেশ ও বিভিন্নভাবে প্রচারণায় এগিয়ে আছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। ফেসবুক, পোস্টার ও ফেস্টুনে দোয়া, সমর্থন চেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ও নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান।

দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা বলেন, আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক দলের দিক থেকে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। কোনো কোনো উপজেলায় দলীয় মান-অভিমান আছে। তবে নৌকা প্রতীক যে পাবে নির্বাচন মাঠে তার পক্ষে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই এবং কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে না আশা রাখছি। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- বিবেচনায় দিনাজপুরের সবকয়টি আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করবে বলে আশা রাখছি।

তিনি বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৬ আসনে আমি নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী। এই আসনে নৌকার মাঝি হিসেবে আমি শতভাগ আশাবাদী। তবে দলীয় সভানেত্রী যাকে যোগ্য মনে করে নৌকা প্রতীক দেবেন মান-অভিমান সব ভুলে গিয়ে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে নির্বাচন মাঠে সবাই একসঙ্গে কাজ করব ইনশাআল্লাহ!

বর্তমান সংসদ সদস্য ও নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিবলী সাদিক বলেন, আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। আমার বাবা মরহুম মোস্তাফিজুর রহমান এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা, আওয়ামী লীগের দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচিত হয়েছি। আমি শতভাগ আশাবাদী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা নৌকার মাঝি হিসেবে এই আসনে আমাকেই মনোনীত করবেন!

এই আসেন নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য ড. আজিজুল হক চৌধুরী বলেন, ২০০৮ সালে মহাজোটের সঙ্গে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের এই আসনটি পুনরুদ্ধার করেছি। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী আমাকে নৌকার মাঝি হিসেবে মনোনীত করবেন বলে আমি শতভাগ আশাবাদী।

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। আমি দীর্ঘদিন থেকে এই উপজেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি। নৌকার মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে আমি শতভাগ আশাবাদী।

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আতোয়ার রহমান বারবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে ইতিমধ্যে পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি করে চার উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় টাঙিয়ে দিয়েছে তার সমর্থকরা।

নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী বিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ ফকির বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে আমি নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী। আমি তেমন কোনো পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি করিনি। আমি নৌকার মনোনয়ন পেতে শতভাগ আশাবাদী।

এই আসনটি থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হাসান এই আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তার পক্ষে মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় নেতারা। উপজেলা পর্যায়ে দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতেও তার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহম্মেদ কচি ও হাকিমপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, হাই কমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের দলীয় কর্মসূচি চলমান আছে। নির্বাচন ঘিরে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।

দিনাজপুর (দক্ষিণ) সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের আমির এবং সম্ভাব্য প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জোটভিত্তিক নির্বাচন বিষয়টি পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেবেন। 

এই আসনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। বাকিটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –