• সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গাইবান্ধার সেই রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনা শুরু

প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২৩  

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সেই বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনে  সোমবার (১৪ আগস্ট) থেকে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনা শুরু হয়েছে। এ স্টেশনে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে  হেলে-বসে টিকিট কেনা চলছিল।  ট্রেনে উঠানামা ও বিশ্রামাগারের প্ল্যাটফর্ম  অপরিকল্পিতভাবে উচু করে নির্মান করায়  নিচে পড়ে যায় স্টেশন মাস্টার ও টিকিট কাউন্টারের ঘর। তখন থেকে ট্রেন যাত্রীদের হেলে-বসে টিকিট কিনতে হচ্ছিল।

বামনডাঙ্গা রেলস্টেশন সূত্র জানায়, সান্তাহার- লালমনিহাট রুটে ১১টি রেলস্টেশন গাইবান্ধা জেলার সীমানায় পড়েছে। এরমধ্যে বামনডাঙ্গা স্টেশনে  স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেনে ওঠা-নামা করতে ২০২১ সালের মে মাসে এ  স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম উচুকরণ করা হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা।  প্ল্যাটফর্ম উচু করায় টিকিট কাউন্টারটি নিচু হয়ে যায়। তখন থেকে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে এই স্টেশনে  হেলে-বসে টিকিট কাটতে হচ্ছিল।

গত রবিবার দুপুরে সরেজমিনে বামনডাঙ্গা স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, কেউ হেলে  কেউবা বসে টিকিট কাটছেন। কেউ পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন। কাউন্টার ফাঁকা হলে তিনিও বসে যাচ্ছেন। কিনছেন টিকিট। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা চলছিল। সোমবার সেই অবস্থা ছিল ভিন্ন। সব যাত্রীরা দাঁড়িয়ে টিকিট কিনেছেন।

দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার ব্যবস্থা করায় খুশি ট্রেন ভ্রমণকারীরা। বামনডাঙ্গা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, অপরিকল্পিতভাবে প্লাটফর্ম নির্মাণ করায় এই  সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্লাটফর্ম উচু করার সঙ্গে সঙ্গে টিকিট কাউন্টারের ঘরও উঁচু করা উচিত ছিল। কিন্তু ট্রেনযাত্রীদের সেবার কথা ভাবা হয়নি। ফলে দুই বছরের বেশি সময় সেই খেসারত দিতে হয় ট্রেন যাত্রীদের। বসে ও হেলে টিকিট কাটার কারণে বয়স্ক ব্যক্তি, নারী, অসুস্থ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা বিপাকে পড়েছিলেন। অনেকে অন্যের মাধ্যমে টিকিট কাটতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন। এখন আর সেই সমস্যা থাকলো না।

বামনডাঙ্গা এলাকার ব্যবসায়ী সেনা সরকার (৪৫) বলেন, ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই ট্রেন যোগে গাইবান্ধা জেলা শহরে যেতে হয়। আমার কোমরে ব্যথা। কোমর বাঁকা করে মেঝেতে বসে কাউন্টার থেকে টিকিট নিতে হযতো। এতে আরও সমস্যায় পড়তে হতো। ট্রেনের টিকেট কাটতে সব বয়সী যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাতো। অনেক আগেই দাঁড়িয়ে থেকে টিকিট কেনার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। বামনডাঙ্গা এলাকার কলেজ ছাত্র শামীম মিয়া বলেন, বসে টিকেট কাটতে অনেক সমস্যা হচ্ছিল। জিন্সের প্যান্ট পরে বসা যেতো না। 

একই এলাকার কলেজ ছাত্রী সাবিনা আক্তার জানান, বামনডাঙ্গা থেকে ট্রেনযোগে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে যেতে হয়। অনেক সময় বসে টিকিট কাটতে লজ্জা লাগতো। কারণ টিকিট কাটার সময় নানা ধরনের লোক থাকতো। সবাই একসঙ্গে টিকিট কাটতেন। ফলে  নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছিল।

এসব বিষয়ে সোমবার বিকেলে বামনডাঙ্গা রেলস্টেশন মাস্টার মো. হাইউল মিয়া বলেন, সোমবার দুপুর থেকে স্টেশন চত্বরে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন স্টেশন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –