‘বঙ্গবন্ধু’: এক অতিমানবীয় সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের প্রবাদ পুরুষ
প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২৩
এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার
প্রায় ১৪ বছরের জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে আর মাত্র ২৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনযাত্রায় সারা পৃথিবীর শোষিত-বঞ্চিত,অসহায়, নিপীড়িত, নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষের আবেগ অনুভূতি আর বিপ্লবী চেতনাকে নিজের অন্তরে ধারণ করে শত্রুপক্ষের মৃত্যুগহ্বরে বসে থেকে নিজের জাতিকে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান অর্জন করিয়ে মাত্র ৯ মাসের আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দেয়ার বিরল ইতিহাস বঙ্গবন্ধু ব্যতীত আর কোনও বিশ্বনেতাদের নেই। সেই সাথে, সময়ের সেরা পাকিস্তানের পদাতিক বাহিনীর যোদ্ধা পরিচয়ের কলঙ্কিত অধ্যায় রচিত হয়েছিল পৃথিবীর যুদ্ধের ইতিহাসে প্রথম লিখিত আত্মসমর্পণের দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। সারা বিশ্বের রাজধানীশহর আর ক্যান্টনমেন্টগুলো প্রকম্পিত হয়েছিল ১৬'ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক দিনটিতে। মুহূর্তের মধ্যে সারা পৃথিবীর আকাশে এমনতর বৈদ্যুতিক চমক, মহাকালের জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত দ্বিতীয়বার ঘটেনি। যে তরঙ্গের আলোক শক্তি চুম্বক শক্তিতে পরিণত হয়েছিল সারাবিশ্বের স্বাধীনতাকামী মানুষের চেতনায় যা প্রেষণার উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের জাতীয়তাবাদী যুদ্ধের অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করেছিল।
১৬'ই ডিসেম্বর ১৯৭১ পরিস্থিতি বিবেচনায় সে সময়টা এমন ছিল যে, বঙ্গবন্ধুর নামটি উচ্চারিত হওয়ার সাথে সাথে সচেতন কিংবা অবচেতনভাবে প্রথম বিশ্বের নেতৃস্থানীয়রা সবাই দাঁড়িয়ে পড়তেন যেমনটা আমরা লক্ষ্য করে থাকি জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন কালে স্বভাবজাত ভাবেই মানুষ উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান করে। তেমনি করে, বঙ্গবন্ধুর নাম শ্রবণে সেসময় বিশ্বনেতাদের সামনে যেন তাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়েছে তাই হকচকিত হয়ে নিজের চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে পড়তেন সকলেই। ব্যক্তিত্বের এতটা সম্মোহনী শক্তি নিয়ে পৃথিবীতে আর একজন রাজনৈতিক মানুষের আগমন হয়েছে সেই ইতিহাস আমাদের জানা নেই।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের কোনও অধিবেশনে দারিদ্রতা বিমোচনের প্রয়োজনে কোনও নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করতেন না বঙ্গবন্ধু। স্পষ্ট কথাটি বলার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক অবিস্মরণীয় ভাবমূর্তি। ওষুধ নির্মাণের মেধাসত্বকে অস্বীকার করে তিনি অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে নিজের জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করে জাতিসংঘের উন্নত দেশগুলোকে উপলব্ধি করাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, আমার দেশ দারিদ্রতার কষাঘাতে পেটের অন্ন জোগাতে যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন তাদের চিকিৎসা ব্যয় এর জন্য উচ্চমূল্যে তোমাদের কাছ থেকে ওষুধ কেনার সামর্থ্য আমাদের নেই।
কাজেই আমার দেশ তার সামর্থ্য অনুযায়ী ওষুধ উৎপাদন করবে। এমন বক্তব্য উপস্থাপনের পর পরই বিশ্বের হতদরিদ্র দেশগুলোর নেতারা সবাই এসে বঙ্গবন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন। যার ফলশ্রুতিতে আজকের বাংলাদেশ নিজেরা ওষুধ উৎপাদন শুরু করেছিল এবং বিশ্বের ৬৭ টি দেশে আজ ওষুধ রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের জ্যোতির্ময় প্রখরতা এতটাই উচ্চমার্গীয় ছিল যে, উন্নত বিশ্বের নেতারাও তখন এমন প্রসঙ্গগুলোর বিরোধীতা করতে রীতিমতো চমকে উঠতেন। বঙ্গবন্ধুর অতিমানবীয় ব্যক্তিত্বের প্রাসঙ্গিক একটি আলোচনায় বর্তমান দুই বাংলার সঙ্গীতাঙ্গনের অত্যন্ত জনপ্রিয় মুখ কবীর সুমনের ( সুমন চট্টোপাধ্যায়) একটি সাক্ষাৎকার থেকে আমরা খানিকটা মিলিয়ে নিতে পারি।
২০১৮ সালে সময় সংবাদের কলকাতার প্রতিনিধি সুব্রত আচার্যের নেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন-
"বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমারও নেতা। আমি কিন্তু ভারতের নাগরিক হিসেবেই এটা বলছি। উনি কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশের নেতা নন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর যখন তিনি ছাড়া পেলেন, পরে যেদিন কলকাতা বিমানবন্দরে তার বিমান নামল, সেদিন বিমানবন্দর থেকে রেডিওতে প্রচারিত হচ্ছিল তার বক্তব্য।তিনি যখন বললেন- "আমি শেখ মুজিবুর রহমান বলছি " তখন আমি ও আমার বাবা মা তিনজনই শুনছিলাম এবং ঐ মুহুর্তে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম। ওনাকে কখনও সরাসরি চোখে দেখিনি। তিনি আজও আমার নেতা।একবার যদি তাকে দেখতে পেতাম! ৭'ই মার্চের যে ভাষণ,সেটা আমার জাতির ভাষণ। শুনেছি হাজার বছরের জাতি আমাদের। এটি ছিল আমাদের বাঙালিজাতির প্রথম স্বাধীনতার উচ্চারণ। আমার গর্ব, আমার আত্মপরিচয়, আমার জাতীয় পরিচয় ঐখানে। এই ব্যাপারে আমি আপোষহীন। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জায়গাটা আমাদের গর্বের বিষয়।
এই যে আমি গান করি, সেটাও কিন্তু তারই একটা প্রভাব। আমিও বঙ্গবন্ধুর মত ওভাবে একা উঠে দাঁড়িয়ে একদিন একটা গান করব, বুক চিতিয়ে বাংলা গান গাইব, যা আমি কোনওদিন দেখিনি গ্রামের বাইরে। আবদুল আলিম গাইতেন নির্মলেন্দু চৌধুরীর কথায়, গিরীণ চক্রবর্তী ওভাবে বুক চিতিয়ে গেয়ে গেছেন- 'তোরা সব জয়ধ্বণী কর'। আজকালকার প্রজন্ম মিনমিনে কন্ঠে গান করে। বঙ্গবন্ধু মিনমিনে লোকের নেতা নন। তিনি একটা লড়াকু জাতির নেতা। যে জাতি শান্তি ভালোবাসে, শান্ত থাকতে জানে, আবার লড়তেও জানে। আমার কাছে বঙ্গবন্ধুর এটাই পরিচয়। আমি রাজনীতির মানুষ নই, তাই তার রাজনৈতিক বিষয়ে কিছু বলতেও পারি না। কিন্তু, আমি ঐটুকু জানি আমরা তিনজন মানুষ সেদিন দাঁড়িয়ে উঠেছিলাম কাঁদতে কাঁদতে। আমি ও আমার বড়ভাই ভেবেছিলাম তখন বাংলাদেশ চলে যাব শুধুমাত্র সেই একটি ভাষনের জোরে। "
হৃদয়ের গহিনে ধারন না করলে কাউকে নিয়ে এভাবে বলা যায় না। বঙ্গবন্ধু প্রকৃতই সেই একটি মাত্র মানুষ, যার অতিমানবীয় সন্মোহনী শক্তির বিস্তার একটি রাষ্ট্রের ভৌগলিক সীমারেখাকে নির্দ্বিধায় অতিক্রম করে অনায়াসে ছড়িয়ে পড়েছিল সমগ্র বিশ্বে। পৃথিবীর তৎকালীন ও তৎপরবর্তী প্রায় সকল প্রান্তের অনুসরনযোগ্য বিশ্বনেতাগণ এবং অন্যান্য বহু অঙ্গনের সুপ্রতিষ্ঠিত বুদ্ধিজীবীরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন আবেগ বারবার প্রকাশ করে গেছেন।
পৃথিবীর যে কোনও সীমানায় বাস করা প্রতিটি বাঙালির জাতিয়তাবাদী চেতনার কেন্দ্রবিন্দু তিনি। তিনিই অবিভক্ত বাঙালিজাতীসত্ত্বার প্রকৃত আত্মপরিচয়। সমাজের যে কোনও পেশার, যে কোনও পরিচয়ের প্রত্যেক মানুষের কাছেই বঙ্গবন্ধু চিরকালীন অজেয় সত্ত্বার এক অবিকল্প প্রতিরূপ। যোগ্যতায়, নেতৃত্বে, বিপ্লবে, মননে, আদর্শে, চেতনায়, উদারতায় ও সাফল্যে তিনি পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসের এমন একটি নক্ষত্র, যার প্রকাশে সভ্যতার স্মরণকালের প্রায় সমস্ত সুপ্রতিষ্ঠিত বিশ্বনেতৃবৃন্দের সকল জাগতিক মহিমা নিষ্প্রভ হয়ে যায়।
লেখক: পুলিশ সুপার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –- রংপুরকে অচল করে দেওয়ার হুমকি জাতীয় পার্টির
- পার্বত্য চট্টগ্রামে হামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবি
- বৈষম্যহীন নতুন সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান
- অমিত শাহ’র বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ বাংলাদেশের
- কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু
- তোফাজ্জল হত্যায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে: ডিএমপি
- ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতিতে শ্রমিকরা, উৎপাদন বন্ধ
- গুলিতে মারা যাননি আবু সাঈদ, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
- জামিন পেলেন না মান্নান
- ২০২৫ সালে হজে যেতে পারবেন না যারা
- ব্যাটারদের সঙ্গে বোলারদের হারের দায় নিতে হবে: ফাহিম
- ইয়াশ রোহান আমার ক্রাশ: তটিনী
- নিউইয়র্কের পথে ড. ইউনূস
- গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রীলংকা যেভাবে বামপন্থীদের হলো
- শ্রীলংকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন দিশানায়েকে
- বাংলাদেশের সংস্কারে সহায়তা করবে জাতিসংঘ
- মেট্রোরেলে রেকর্ড: ১৮ দিনেই ছাড়ালো প্রথম ৬ মাসের আয়
- সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে
- ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
- সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক গ্রেফতার
- আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে ঢাকায় চীনা মেডিকেল টিম
- চাকরির বয়সসীমা ৩৫ গুজব বললেন: সিনিয়র সচিব
- বাইডেন-মোদি বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা
- ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর ইলিশ ধরা-বিক্রি নিষিদ্ধ
- ভারতের সঙ্গে অতীতের নিষ্ক্রিয়তার দিন শেষ হয়ে গেছে
- শান্তদের শোচনীয় হার
- সাক্ষ্য দিতে আদালতে পরীমনি
- নামাজের সময়সূচি: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, স্বাভাবিক হচ্ছে রাঙ্গামাটি
- ৮৩ দিন পর ক্লাসে ঢাবি শিক্ষার্থীরা
- চাঁদাবাজদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নেই: মির্জা ফখরুল
- জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল
- বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে কাদের গনি চৌধুরীকে অব্যাহতি
- দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে এমপক্স ভাইরাস
- রেসিপি: দারুণ স্বাদের চুই ঝালের গরুর মাংস ভুনা
- প্রত্যাহার হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধের আদেশ
- ‘বরবাদ’-এ কি শাকিবের সঙ্গে শাবনূর-জানালেন নির্মাতা
- বিএনপিতে বহিষ্কার আতঙ্ক!
- যুক্তরাষ্ট্রে ছড়াচ্ছে মশাবাহিত বিরল রোগ, নেই চিকিৎসা
- ১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি গাজী টায়ারের কারখানার আগুন
- বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, তিন বিভাগে ভারী বৃষ্টির আভাস
- দেশের এই দুর্যোগে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন না: ঢাবি উপাচার্য
- বন্যায় ১২০৬ স্কুল-কলেজের ক্ষতি, ৫৬৫টিতে ক্লাস বন্ধ
- চট্টগ্রাম অঞ্চলে আরও তিনদিন বৃষ্টি হতে পারে
- শাকিব-সিয়ামের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ!
- বিশ্বনবি (সা.) শরীর ব্যথায় যে দোয়া পড়তেন
- ‘আমাকে আর কেউ চাকরি দেবে না, বলবে তোর পা নেই’
- ফেনীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুরে অবনতি
- টাইফুন ‘ইয়াগি’ এখন বঙ্গোপসাগরে, রাতের মধ্যেই নিম্নচাপের শঙ্কা
- ঢামেকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বৈঠকে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা