• মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সাদুল্লাপুরে বেড়েছে লাম্পি স্কিন রোগের প্রকোপ

প্রকাশিত: ২ আগস্ট ২০২৩  

সারা দেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ(এলএসডি) ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আক্রান্ত হচ্ছে সকল বয়সের গরু। ইতিমধ্যেই মারা গেছে অনেক গরু। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায়ও বেড়েছে এ রোগের প্রকোপ। 

যেহেতু এটি ভাইরাস জনিত রোগ তাই এরোগের কার্যকর চিকিৎসা নেই। এ কারণে জৈব পরিচর্যার উপর জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চিকিৎসক ডাঃ আব্দুস সামাদ জানিয়েছিছেন, লাম্পি ভাইরাস জনিত রোগ।

এ রোগ ২০১৯ সালে যখন দেশে প্রথম আসে তখন জনমনে যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছিলো সেখান থেকে আমরা বেড়িয়ে এসেছি। লাম্পি বা এল এস ডি এর ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশে প্রয়োগে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। এরোগের মারাত্মক লক্ষ্মণ গুলো হলো, গরুর শরীরে প্রচন্ড জ্বর থাকবে।

শরীরে বিভিন্ন জায়গায় গুটি গুটি হবে। পা, গলকম্বল, বুকের নিচে ফুলে যাবে। অনেক সময় গলকম্বল ও বুকের নিচে পানি জমতে পারে। ফুসফুস আক্রান্ত হলে গরুর শ্বাসকষ্ট হতে পারে, পাকস্থলী আক্রান্ত হলে মলদার দিয়ে রক্ত পড়তে পারে, গরু জাবর কাটা, খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিবে।

এ রোগ ছড়ায়  মশা, মাছি, রক্ত চোষা কীটপতঙ্গের মাধ্যমে। এর রোগটি সংক্রমণ রোগ নয় তাই বাতাসে কিংবা আক্রান্ত গরু থেকে ছড়ায় না। অধিক আক্রান্ত রোধে জৈব নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। গরুর যত্ন নিতে হবে যেমন, অপেক্ষা কৃত খোলামেলা জায়গায় গরু রাখা, বদ্ধ ঘরে গরু না রাখা, ফ্যানের নিচে রাখা, গরুকে গোসল করানো।

যেহেতু রোগটি বর্ষা কালে হয় তাই গরুর ঘরের আদ্রতা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর বেশী হলে বাতাসে জ্বলীয় বাষ্প বেশী থাকে ইত্যাদি। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা হিসাবে প্যারাসিটামল ও ব্যথা নিরোধক ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে। আক্রান্ত গরুকে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে আমরা নিরুৎসাহিত করছি এবং গরুর যত্নের উপর জোর দিচ্ছি। আক্রান্ত ও সুস্থ গরুকে প্রয়োজনে ভ্যাকসিন প্রদান করা। বাজারে লাম্পি ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে।

বাছুর আক্রান্তের বিষয়ে সাদুল্লাপুরের উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডক্টর সুমনা আক্তার বলেন, বাছুর আক্রান্ত হলে বেশী যত্ন নিতে হবে কারণ বাছুরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।বাছুর যেন দুর্বল না হয় সেজন্য তরল খাবার খাওয়ানো যেতে পারে।এ রোগের কার্যকর কোন চিকিৎসা না থাকলেও অনেক সময় ভেষজ যেমন, নিমপাতার রস,গুড়ের সরবত,খাবার সোডা, লবন,লেবুর রস, পানির মিশ্ররণ দু বেলা খাওয়ালে কাজ হয়।

গরুর শরীরের ক্ষত সারিয়ে তুলতে এন্টি সেফটিক ব্যবহার করতে হবে। গরুর গলকম্বল ও বুকের নীচের জমা পানি বেড় করা যাবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার প্রয়োজন নেই। সাধারণত এ রোগের প্রকোপ ৮ থেকে ১০ দিন। পানি জমার কারণে যদি গরুর শ্বাসকষ্ট হয় সেক্ষেত্রে সামান্য পরিমানে পানি বেড় করে দেয়া যেতে পারে। গরুর ধকল সামলাতে অবশ্যই রোগ পরবর্তী সময়ে ডাক্তারি পরামর্শ ক্রমে ভিটামিন ও মিনারেল জাতীয় ঔষধ খাওয়ানো যাবে।

আক্রান্ত গরুর বিষয়ে অবশ্যই নিকটস্থ প্রাণী সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করবেন। এ রোগের প্রকোপ ঠ্যাকাতে আমরা উঠান বৈঠক, জনগণ কে সচেতন করছি ও লিফট বিতরণ করছি। খামারিদের আতঙ্কিত হওয়া কিছু নেই, এ রোগে মৃত্যুর হার ১% ও আক্রান্তের হার১০%। আমি আবারও বলছি এরোগের ক্ষেত্রে খামারীদের গরুর অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –