• মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৯ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৩ বছরে হাজার ব্যাগ রক্তদান করেছে ‘ব্লাড ব্যাংক কুড়িগ্রাম’

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২৩  

 
শুরুটা ২০২০ সালের ২৪ জুলাই। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সবাই যখন ঘরবন্দি, তখনই ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক যুবকদের একটি দল চিন্তা করল সাংগঠনিকভাবে রক্তদান করার এবং অন্যকে রক্তদানে উৎসাহিত করার। পাশাপাশি রোগিদের সাথে রক্তদাতাদের যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয়া। এভাবেই ৩ বছরে প্রায় সংগঠনের সদস্যরাসহ ১ হাজার ব্যাগ রক্তদানে অংশগ্রহণ করেছে সংগঠনটি। গল্পটি কুড়িগ্রামের রক্তদান বিষয়ক সংগঠন "ব্লাড ব্যাংক কুড়িগ্রাম"। বর্তমানে সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য প্রায় ১০০ জন। এবং নিয়মিত রক্তদানকারী তালিকাভুক্ত রক্তদাতা প্রায় ১ হাজার।

সোমবার (২৪ জুলাই) সংগঠনটির ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন এবং পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে সকল স্বেচ্ছাসেবক উপস্থিত হয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বর্ননা করেন। কুড়িগ্রাম সদরের মেডিকেয়ার নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজের ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল হল রুমে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বর্তমানে প্রায় ১০০ জন সক্রিয় সদস্যের এই সংগঠনটি কুড়িগ্রাম জেলা এবং জেলার বাইরে রক্তদান এবং রোগীদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে রক্তদাতার সাথে যোগাযোগ ঘটিয়ে দিয়ে বেশ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। এছাড়াও নিয়মিত বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠান করে থাকে সংগঠনটি।

সংগঠনটির উপদেষ্টা সাদ্দাম বলেন, এটি একটি পরিবার। আজকে এই পরিবারের জন্মদিন। এটি এমন একটি সংগঠন যাদের সবাই আন্তরিক। আমরা আমাদের কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করবো।

সক্রিয় সদস্য ফারুক আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই আমি সংগঠনের সাথে যুক্ত আছি। রক্তদান করতে ভালো লাগে। একজন রোগীকে রক্ত সংগ্রহ করে দেয়ার পর তাঁর মুখের হাসিটার জন্যই দীর্ঘদিন এই সংগঠনের সাথে কাজ করে যেতে চাই"।

উপদেষ্টা মুকুল হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ব্যাবহার করে আমাদের সংগঠনের ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে রোগীদের নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্তের চাহিদা প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে রক্তদানের স্থান ও রোগীর স্বজনদের যোগাযোগ নম্বর উল্লেখ করা হয়। এরপর রক্তদাতা নিজে থেকে যোগাযোগ করেন অথবা আমাদের পক্ষ থেকে আমাদের তালিকাভুক্ত রক্তদাতাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। রক্তদান শেষে রক্তদাতা ও রোগীর খোঁজ নেয়া হয়। অনলাইনে ছাড়াও অফলাইনে রোগীর স্বজনরা যোগাযোগ করে, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করি সবাইকে রক্ত সংগ্রহ করে দেয়ার। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, আমরা খুব দ্রুত 'সারথি পরিবার' সংগঠনের সাথে যৌথভাবে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করবো।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত জাহানুর রহমান খোকন বলেন, করোনা কালীন সংকটে জন্ম নেয়া সংগঠনটি শুরুতেই অনেক ঝুঁকি নিয়েছে। সেই সময় এমন একটি সংগঠনের অনেক প্রয়োজন ছিল। পাশাপাশি কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের রোগীদের দিকে বিশেষ নজর দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

শুধু রক্তদান নয়। সামাজিক সংগঠন হিসেবে সংগঠনটির দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ সরবরাহ, বৃক্ষরোপণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি সহ নানান ধরনের সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে সংগঠনটি।

এম এ কে আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কয়েকজন উপদেষ্টা, মেডিকেয়ার নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি কলেজ এর অধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং সামাজিক সংগঠন সারথি পরিবার এর পক্ষ থেকে শাহিনুল ইসলাম লিটন, উৎসর্গ নার্সং ইনিস্টিউটের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সহ আরও অনেকে। এরপর কেক কাটার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –