• মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৯ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোক্তা অধিকারের অভিযানে ১ বছরে দেড় কোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২৩  

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর গত অর্থ বছরে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ১ কোটি ৪৮ লাখ ৪১ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করেছে। এসব অভিযানে আদায় করা জরিমানার অর্থ থেকে সরকারি কোষাগারের রাজস্ব খাতে জমা করা হয়েছে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা। এছাড়া বিধান অনুযায়ী আদায় হওয়া জরিমানার অর্থ থেকে ৫৬ জন অভিযোগকারীকে ২ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থ বছরের বিগত জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে ১ বছরে বিভাগের রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও এবং দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন বাজার ও শপিংমলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা সাধারণের স্বার্থ সংরক্ষণে মোট ১ হাজার ৩৮১টি পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময়ে সংশ্লিষ্ট বাজার এবং শপিংমলের ৩ হাজার ২৮২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার পরিপন্থী কার্যক্রমের জন্য জরিমানা করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার মূল্য তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিকমূল্যে পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, খাদ্যদ্রব্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়া করন, মিথ্য বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে প্রদান না করা, ওজনে ও পরিমাপে কারচুপি, নকল পণ্য উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রয় করত। এ অভিযোগের প্রমাণ সাপেক্ষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ২০০৯ সালের বিধান অনুযায়ী কারাদণ্ড ও অর্থদন্ড শাস্তি প্রদান করা হয়। এসব ভোক্তা অধিকার পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মোট ১ কোটি ৪৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া ভোক্তা সাধারণের সঙ্গে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অধিকার ক্ষুণ্নের কারণে ক্ষুদ্ধ ভোক্তাদের পক্ষ থেকে একই সময়ে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়সহ আটটি জেলা কার্যালয়ে মোট ৫০২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ সময়ে বিগত অর্থ বছরের অভিযোগসহ মোট ৪৯৪টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়। বর্তমানে ৮টি অভিযোগ অনিষ্পত্তির অবস্থায় রয়েছে।

তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে নিষ্পত্তির মাধ্যমে ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা করে তাদের নিকট থেকে আরও ২ লাখ ৪৯ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আদায় বরা জরিমানার অর্থ থেকে ভোক্তা অধিকার বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ৫৬ জন অভিযোগকারীকে আদায়কৃত অর্থের মধ্য থেকে ২৫ শতাংশ হিসেবে ৬২ হাজার ৪৫০ টাকা প্রদান করা হয়। এসব আদায় হওয়া অর্থসহ সরকারি কোষাগারের রাজস্ব খাতে মোট ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫০ টাকা জমা করা হয়েছে।  

ভোক্তা অধিকার অধিদফতর রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজাহারুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, ভোক্তা সাধারণের স্বার্থসংরক্ষণ নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনের প্রতিপালন এবং সেই অনুযায়ী ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধের লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয়ে পণ্য উৎপাদন বা প্রস্তত, বা বিক্রয়কালীন ভোক্তা স্বার্থ অধিকার ব্যহত করার বিরুদ্ধে আমাদের চলমান অভিযান এবং কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। এছাড়া ভোক্তা সাধারণ প্রতিনিয়ত যেসব পণ্য ক্রয় করতে গিয়ে জীবন এবং সম্পদের ক্ষতিসহ প্রতারিত হচ্ছেন, সেসব বিষয়ে প্রতারক এবং জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত অভিযান আরও জোরদার এবং অব্যাহত রাখা হবে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের ৮ জেলার কর্মকর্তারা গত এক বছরে বিভিন্ন এলাকায় ১২০টি সচেতনতামূলক সভা এবং ৬৭টি সেমিনারের আয়োজন করেছে।           

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –