• বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১০ ১৪৩১

  • || ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বেরোবিতে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ১৮৮

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৩  

উত্তরবঙ্গে শিক্ষার দর্পণ নামে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক সংকট চরমে। বর্তমান শিক্ষকের সংখ্যা ১৮৮ জন। এর মধ্যে শিক্ষাছুটিতে রয়েছেন ২৮ শিক্ষক। অর্থাৎ প্রতি ছয়জন শিক্ষকের মধ্যে একজন রয়েছেন শিক্ষাছুটিতে। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেরোবিতে বর্তমানে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক ১৮৮ জন। অর্থাৎ প্রতি ৪২ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রয়েছেন। ফলে অতিরিক্ত ক্লাসের চাপে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষকদের গবেষণা কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় খারাপ অবস্থায় রয়েছে রংপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। 

বৈশ্বিকভাবে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত একজন শিক্ষক থাকবেন। জাতীয় পর্যায়েও দেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এ মানদণ্ড অনুসরণে উৎসাহিত করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। যদিও সে লক্ষ্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম।
 
অথচ ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলে বাস্তবে সেটার উল্টো পথে হাঁটছে রংপুরের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।
 
ফলশ্রুতিতে গড়ে একজন শিক্ষককেই নিতে হচ্ছে ৮-১০টি কোর্স। অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষার চাপে গবেষণা কার্যক্রমে যথেষ্ট সময় দিতেন পারছেন না শিক্ষকরা। শিক্ষক স্বল্পতায় কার্যত ঝিমিয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষণা কার্যক্রম।

সূত্রে বলছে, ১৬০ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান। এতে বিভাগ প্রতি গড়ে মাত্র ১১ শিক্ষক আছেন। ২২টি বিভাগের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান, কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং,  লোকপ্রশাসন, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের নাজুক অবস্থা। 

জানা যায়, চার বছর মেয়াদের আট সেমিস্টারের স্নাতকে পড়ানো হচ্ছে ন্যূনতম ৪৮টি কোর্স এবং এক বছর মেয়াদের দুই সেমিস্টারের স্নাতকোত্তরে পড়ানো হয় ন্যূনতম ১২-১৪টি কোর্স। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় এক শিক্ষককে নিতে হচ্ছে ৮-১০টি কোর্স। কিছু বিভাগে তারও বেশি।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বলেন, শিক্ষক সংকটের জন্য প্রধানত একাডেমিক ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকদের যেমন ব্যক্তিগত গবেষণার জায়গা থাকে, তাদের নিজেদের পড়ালেখার জায়গা থাকে সেটা সম্ভব হচ্ছে না।  

তিনি আরো বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত চার বছর শিক্ষকদের কোনো পদ চাওয়া হয়নি। ফলে বর্তমান উপাচার্যের ওপর এর প্রভাব পড়েছে। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পদ পাচ্ছি না। অতীতে যদি পদ চাওয়া হতো তাহলে শিক্ষকদের সংকট এখন অনেকটা কমে যেত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে শিক্ষক চাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে চিঠি পাঠিয়েছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষকের পদ চেয়ে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে আবেদন করেছি। পদ পেলে নিয়োগ দেওয়া হবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –