• বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১০ ১৪৩১

  • || ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ইউএনও`র ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৩  

চরের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে কুড়িগ্রামের চিলমারীর উপজেলা প্রশাসন। শিক্ষা গ্রহণে আগেই ঝড়ে পড়ছিল আমতলা চরের শিশুরা। তাই চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুবুর রহমানের উদ্যোগে শিশুদের ঝড়ে পড়া রোধে প্রাথমিকভাবে শুরু করা হয়েছে একটি ভ্রাম্যমাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়।  এই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও পাঠদান শুরু হওয়ায় শিশুদের মাঝে ফিরছে শিক্ষা, দেখতে শুরু করেছে তারা আলোর মুখ। অভিভাবদের মাঝেও দেখা দিয়েছে প্রশান্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের একটি চর আমতলার চর। বেশ কয়েক বছর থেকে চরটি স্থায়ীরূপ ধারণ করেছে এবং প্রায় ৪ শতাধিক পরিবারের বসবাস সেখানে। সেখানে ২০১৭ সালে গড়ে তোলা হয় একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র। একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র থাকলেও যোগাযোগ শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত তারা। 

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় চরের শতশত শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়। সেসব শিশুরা বিভিন্ন সময় শিশু শ্রমে ঝুঁকে পড়ে। বিষয়টি বিভিন্নভাবে জানতে পেরে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান।

তিনি পরিদর্শন শেষে স্থানীয় অভিভাবক ও শিশুদের দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমতলা আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একটি ঘরে ভ্রাম্যমাণভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করেন। বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয় আমতলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা প্রাথমিক বিদ্যালয়।

চলতি বছরের শুরু থেকে বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু হয়েছে। বর্তমানে শিশু শ্রেণি, ১ম ও ২য় শ্রেণি তিনটি ক্লাসে ৫০ জন শিশু শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন স্থানীয় দুই নারী। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টির কার্যক্রম চলছে। 

বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী রুবেল বলেন, স্কুলটি হয়ে আমরা লেখাপড়া শিখতেছি। আমি পড়াশোনা করতে চাই এবং শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চাই।

ওই স্কুলের শিক্ষিকা নাজমা আক্তার বলেন, ইউএনও স্যারের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় আমরা চেষ্টা করছি পাঠদানের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা গ্রহণের। দ্রুত আমতলা চরে সরকারিভাবে বিদ্যালয় গড়ে তোলার আহ্বান জানাই। 

এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদ বলেন, এই চরে প্রায় চারশ পরিবারের বসবাস, শত শত শিশু রয়েছে কিন্তু কোনো বিদ্যালয় নেই। যার কারণে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উদ্যোগে আপাতত শিশুদের ঝড়ে পড়া রোধে ভ্রাম্যমাণ হিসাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে, এখানে সরকারিভাবে বিদ্যালয় খুব প্রয়োজন। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান বলেন, কোনো শিশু যেন শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। তাই আমরা চেষ্টা করছি এবং যে এলাকায় বিদ্যালয় নেই সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –