• বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১০ ১৪৩১

  • || ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নীলফামারীতে বৃষ্টির জন্য খোলা মাঠে নামাজ আদায়

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২৩  

 
উত্তরের সীমান্ত জেলা নীলফামারীতে টানা কয়েক দিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। এছাড়াও প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র তাপপ্রবাহে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় নামছে না মানুষজন। বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে ফসলের মাঠ। গরম থেকে বাঁচতে বৃষ্টির আশায় প্রহর গুনছে মানুষ। এ অবস্থায় তীব্র দাবদাহ থেকে মুক্তি ও বৃষ্টির জন্য খোলা আকাশের নিচে বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি এলাকার কয়েকশ মুসল্লি।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার চিলাহাটি খানকায়ে কারামতিয়া শরীফ প্রাঙ্গণে দ্বীনি কাফেলার আয়োজনে ও খানকায়ে কারামতিয়া শরীফের সার্বিক সহযোগিতায় বিশেষ এ নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়।

ধর্মমতে, এ নামাজকে বলা হয় ‘ইসতিসকার নামাজ’। এ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বা পানির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, কালবৈশাখীর মৌসুমেও বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো টানা তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তারা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছিলেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেয়ার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়েছিলেন তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পাঞ্জাবি-টুপি পরে জায়নামাজ নিয়ে চিলাহাটি খানকায়ে কারামতিয়া শরীফ প্রাঙ্গণ মাঠে জড়ো হয়েছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। কিছুক্ষণের মধ্যেই নামাজ আদায় ও দোয়া পরিচালনার জন্য হাজির চিলাহাটি ফাজিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হযরত মাওলানা কারী একরামুল হক। প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নামাজের নিয়মকানুন বলেন তিনি। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন সবাই। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে সবাই বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেন।

নামাজে অংশগ্রহণ করা মুসল্লিরা বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ খুব বিপদে আছে। বৃষ্টি বা পানির জন্য আল্লাহ নামাজের মাধ্যমে চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্র হয়ে এ নামাজ আদায় করেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল হক  বলেন, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছেই। এ জন্য আমরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। 

ভ‍্যানচালক বাবলু বলেন, দিনে যা কামাই করি তা খাই। গরিবের জন‍্য দিনগুলো বছরের মতো হয়েছে। মোনাজাত করি আল্লাহ্ পাক যেন তাড়াতাড়ি বৃষ্টি দেন।

ইমাম হযরত মাওলানা কারী একরামুল হক বলেন, মানুষ তার পাপের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। মানুষ, জীবজন্তু, পশুপাখি অনাবৃষ্টি ও অতি খরায় ভুগছে। তাই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য বৃষ্টির আশায় আমরা মহান আল্লাহ পাকের দরবারে মাফ চেয়ে কান্নাকাটি করে নামাজ আদায় করেছি। বৃষ্টির জন্য প্রতিদিন সবাইকে ইস্তেগফার করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –