• শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৩ ১৪৩১

  • || ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

১০ টাকার ঈদ বাজারে আনন্দের ছাপ

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৩  

‘প্রথমে মোর বিশ্বাস হয় না। কিন্তুক যখন ১০ টাকাতে সেমাই-চিনি, চাউল-তেল, মসলাসহ আরও মেলা কিছুর ব্যাগ হাতোত পানু, তখন মনটা মোর জুড়ি গেল বাহে। সত্যি ১০ টাকাতে এত কিছু পাইম চিন্তাও করো নাই।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নুরবানু। ঈদের আগে ১০ টাকায় ব্যাগভর্তি বাজার করতে পেরে খুশি এই নারী শ্রমিক।

রোববার (১৬ এপ্রিল) রংপুর মহানগরীর বিনোদপুরে শিবরাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ‘ছিন্নমূলের সুপারশপ’ ব্যানারে এমন আয়োজন করে ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সী অসহায়, দুস্থ ও ছিন্নমূল নারী-পুরুষ সেখানে ঈদ বাজার করেন।

যেখানে ১০ টাকায় মিলেছে এক কেজি আতপ চাল, চিনি, সেমাই, লবণ, আলু, পেঁয়াজ, ২ প্যাকেট দুধ, গরম মসলা ও তেল।

ব্যতিক্রমী এই সহজলভ্যের বাজারে মাত্র ১০ টাকায় সেমাই, চিনি, তেল, চালসহ একটি পরিবারের পুরো ঈদ বাজার পেয়েছেন শতাধিক পরিবার। ঈদুল ফিতরের আগে অসহায়-ছিন্নমূল পরিবারের মাঝে হাসি ফোটানোর চেষ্টা থেকে এ উদ্যোগ নিয়েছে ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই’ এর তরুণ উদ্যোক্তারা।

এদিন ছিন্নমূল লোকজনকে ঈদ বাজারের পাশাপাশি সংগঠনটির পক্ষ থেকে ১৮টি পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান ও খাঁচাসহ মুরগি বিতরণ করা হয়।

ঈদ বাজারের ব্যাগ হাতে বাড়ি ফেরার সময় একেকজনের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ছাপ। মুচকি হেসে নুরুল বকসি নামের একজন বলেন, ‘এই যুগে ১০ টাকায় এত কিছু পাওয়া যায় না। এত কিছু পাওয়া যাবে চিন্তাই করি নাই। ১০ টাকায় পুরো ঈদ বাজার পাওয়ায় অনেক খুশি লাগছে।’

সংগঠনের কর্মীরা জানান, বেকার সমস্যা সমাধান করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। শুধু সহজলভ্য ঈদ বাজারই নয়, অসহায়-দুস্থ মানুষদের স্বাবলম্বী করতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে চলো স্বপ্ন ছুঁই নামের এ সংগঠনটি।

এ বিষয়ে ‘চলো স্বপ্ন ছুঁই’-এর প্রতিষ্ঠাতা মুহতাসিম আবশাদ জিসান বলেন, সবার সহযোগিতা নিয়ে এরই মধ্যে রংপুরের কয়েক শ পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। এবার আমরা ঈদকে সামনে রেখে ছিন্নমূলের সুপারশপ ১০ টাকা ঈদ বাজার নামের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। শতাধিক ছিন্নমূল পরিবারের মাঝে ঈদের নয়টি পণ্য ১০ টাকার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে। সমাজের বিত্তবান মানুষরা যদি এগিয়ে আসে তাহলে এমন আরও অসহায়-ছিন্নমূল পরিবারের মাঝে হাসি ফোটানো সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আমরা পাঁচ বছর ধরে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে এবার আমরা ১৮টি পরিবারকে ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান ও মুরগি দিয়ে সহায়তা করেছি। তারা ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও এর মাধ্যমে তাদের সংসার এবং জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –