• রোববার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৩ ১৪৩১

  • || ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মাছ পেয়ে কেঁদে ফেললেন রঞ্জিনা

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৩  

 
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁছগাছী ধরলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে অবস্থিত দুটি খাস পুকুরে সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে দেশীয় প্রজাতির ১৬মন মাছ উত্তোলন করে বিতরণ করা হলো ১৩৬জন সুফলভোগীদের মাঝে। এই রমজানে ভাগে ৪ কেজি মাছ পেয়ে খুশি পরিবাবগুলো।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের রঞ্জিনা (৪৫) জানালেন, ‘রমজান মাস মুরাই গেইল হামরা আজ পর্যন্ত একটা দিন মাছ কিনবের পাই নাই। আজ মাছ পায়া খুউব খুশি হইছি। ছওয়া-পওয়াক নিয়া শান্তি করি মাছ খাবার পামো।’ কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন তিনি। আশ্রয়ণ প্রকল্পে অবস্থানরত হতদরিদ্রদের টানা পোড়ণের জীবনে আজ যেন খুশির ঝলক নিয়ে এল এই তরতাজা মাছগুলো। 

তারই মতো আমেনা বেওয়া (৩৮) জানান, ‘শেখ হাসিনা হামাক ঘর দিছে। কাল চেয়ারম্যান চাইল দিছে। আইজ মাছ পাছি। আইজ আগা রাইতে-পাছা রাইতে মাছ দিয়া ভাত খাইমো।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা মৎস অফিসার ইশমত আরা জানান, ছয় মাস পূর্বে উপজেলা মৎস অফিসের উদ্যোগে এখানকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের দেড় একর আয়তনের দুটি পুকুরে ১৪০ কেজি দেশীয় মাছ অবমুক্ত করা হয়। এছাড়াও এখানকার ৪০জন নারীকে আত্মকর্মসংস্থান ও মৎসচাষ ব্যবস্থাপনার উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এরফলে অনেক পরিবার হাঁস-মুরগী ও বাড়ীর চারপাশে ছোট্ট পরিসরে সবজি বাগানের উপর ঝুঁকে পরছে। বিশাল আয়তনের এই পুকুর দুটিতে মাছ চাষের মাধ্যমে এই পরিবারগুলো যাতে স্বাবলম্বী হতে পারে এজন্য সরকার সব ধরণের সহযোগিতা করছে। আমরা আশা করছি আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত পরিবারগুলো ক্রমেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।

পাঁচগাছী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাতেন সরকার জানান, সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর নির্মাণের সময় দুটি পুকুর খনন করে। মৎস বিভাগ থেকে সেই পুকুর দুটিতে মাছের পোনা ছেড়েছিল। আজ কিছুটা মাছ উত্তোলন করে বিতরণ করা হয়। ঈদের সামনে আবারো মাছ উত্তোলন করে বিতরণ করা হবে। এতে ভূমিহীনদের পুষ্টির চাহিদা মিটবে।

কুড়িগ্রাম সদরের এসি ল্যান্ড মিজানুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভূমিহীন ও গৃহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুটি পুকুরে সরকারিভাবে মাছের পোনা ছাড়া হয়েছিল। আজ দুটি পুকুর থেকে ১৬ মন মাছ উত্তোলন করা হয়েছে। সেই মাছ ৪ কেজি করে প্রত্যেককে দেয়া হলো।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান জানান, রমজানের এ সময়টাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিবারগুলো মাছ পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে। সরকারিভাবে তাদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। এছাড়াও সরকারের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধায় তাদেরকে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যারা আত্মকর্মসংস্থানের চেষ্টা করছে, সরকার তাদের পাশেও দাঁড়াচ্ছে। আমরা চাই এসব ভূমিহীন পরিবার অন্যের সহায়তা ছাড়াই আত্মনির্ভরশীল হোক।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –