• বুধবার ০২ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৬ ১৪৩১

  • || ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিরলে ধুমধামে বট-পাকুড়ের বিয়ে

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩  

বিরলে ধুমধামে বট-পাকুড়ের বিয়ে                                           
ঢাক-ঢোল আর সানাইয়ের সুর। দিচ্ছেন উলুধ্বনি। সঙ্গে পুরোহিতের মন্ত্র। সাজানো হয়েছে ছাদনাতলা। পাশেই ব্যস্ত রাঁধুনী। চলছে নাচগানও। বিয়ের আয়োজনে নেই কোনো কমতি। তবে এত কিছু আয়োজন করা হয়েছে বট আর পাকুড় গাছের বিয়েকে কেন্দ্র করে। 

গতকাল সোমবার দিনাজপুরের বিরলের মঙ্গলপুর ইউপির রুদ্রপুর গ্রামে এমনি ধুমধাম করে বিয়ে হলো বট ও পাকুড় গাছের। এতে আশেপাশের প্রায় শতাধিক পরিবার অংশ নেন। এদিন সকাল থেকে শুরু হয় বিয়ের কার্যক্রম। চলে বিকেল পর্যন্ত। বটপাকুড়ের বিয়েতে বটগাছকে কনে আর পাকুড় গাছকে বর হিসেবে সাজানো হয়। বিয়েতে কনের বাবা হিসেবে কন্যাদান করেন সুব্রত চন্দ্র রায় আর ছেলের বাবা ছিলেন একই এলাকার অনীল চন্দ্র রায়। বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন পুরোহিত রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী।

কন্যাদান (বটগাছ) করা সুব্রত চন্দ্র রায় বলেন, এতদিন শুধু শুনেছি, কোনো দিনও সেই বিয়ে দেখিনি। আজকে নিজেই কন্যার বাবা হিসেবে বটগাছকে সম্প্রদান করছি। আমাদের পরিবারের সবার মঙ্গল কামনায় এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। সনাতন রীতিনীতি মেনেই এই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

ছেলের বাবা (পাকুড় গাছ) অনীল চন্দ্র রায় বলেন, বট ও পাকুড় গাছ প্রাকৃতিকভাবেই জন্মেছিল আমার ঠাকুরবাড়িতে। তখন সুফল হওয়ার জন্য আমার মা এই গাছগুলোকে বিয়ে দিতে বলেছিলেন। তারপর আমরা দুজন মিলে বট-পাকুড় গাছ দুটি এখানে রোপণ করি। আজকে সেই গাছেরই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের সব মঙ্গল হবে। আমাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের বিপদ-আপদ দূর হবে। 

বট-পাকুড়ের বিয়ে দেখতে আসা রত্না রায় বলেন, বট-পাকুড়ের বিয়ে হবে এটা শোনার পর থেকেই অনেক কৌতূহল হচ্ছিল। আগে অনেকবার শুনেছি বট-পাকুড়ের বিয়ের কথা। কিন্তু এই প্রথমবার নিজ চোখে বিয়ে দেখলাম। 

পুরোহিত রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, বট-পাকুড়ের বিয়ে দিলে পরিবারের অমঙ্গল দূর হয়। তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েদের কোনো অভাব বা দুঃখ-কষ্ট তাদের জীবনে আসবে না। এজন্য আজকে বট-পাকুড়ের বিয়ে দেওয়া। 

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –