• বুধবার ০২ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৭ ১৪৩১

  • || ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রৌমারী সীমান্তে বন্য হাতির তাণ্ডব

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২৩  

কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা সীমান্তে বন্যহাতি তাণ্ডব শুরু হয়েছে। বন্য হাতির তাণ্ডবে এই সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার ভুট্টা ক্ষেতসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে বন্য হাতির দল। 

বন্য হাতির তাণ্ডবে মানুষজন আতঙ্কিত হওয়াসহ কৃষকরা ফসল হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছেন। এই দুই উপজেলায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে বন্য হাতির দল আর্ন্তজাতিক সীমান্ত পিলার ১০৭১-৭২ নম্বর পিলার অতিক্রম করে বাংলাদেশের অভ্যন্তর প্রবেশ করছে।

হাতির দল বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ভূট্টা, সরিষা, বোরো ধানের বীজতলাসহ প্রায় ১০ বিঘা বিভিন্ন ফসল খেয়ে সাবার করছে। কৃষকের জমিতে সেচ দেয়ার কাজে ব্যবহৃত শ্যালো মেশিন হাতির সুঁড় প্যাচিয়ে পায়ের তলে ফেলে অকেজো করছে।

শনিবার রাতে বন্য হাতির দল বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউপির আলগারচর ও রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী ও মিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে তাণ্ডব চালায়। এতে দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার ভুট্টা ক্ষেতসহ প্রায় ১০ বিঘা জমির ফসল খাওয়াসহ পা ও সুঁড় দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে আসা এসব বন্য হাতি তাণ্ডব চালিয়ে ভোর হলেই চলে যাচ্ছে পাহাড়ি অঞ্চলে। 

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত শফিউল আলম, ফরজ আলীসহ আরো অনেক জানান, প্রতিবছর বন্য হাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে আমাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত পার হয়ে হাতির দল বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় আমাদের প্রতিনিয়ত আতঙ্কিত অবস্থায় থাকতে হয়। ফসল ও আমাদের নিজের জীবন বাঁচাতে বন্য হাতি তাড়াতে পটকা, ঢোল-ঢাক ও আগুনের ভুতি জ্বালাতে হচ্ছে। এ ব্যবস্থা সামান্য সময়রে জন্য হলেও তা অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। এসব চেষ্টাও ব্যর্থ হচ্ছে আমাদের। 

এ অবস্থায় আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে বন্য হাতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে কৃষকরা তথা সীমান্তবর্তী বাংলাদেশিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।

হাতির তাণ্ডবে ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে স্থানীয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, সীমান্তে বন্য হাতির তাণ্ডবে সীমান্তবর্তী বাংলাদেশি কৃষকের প্রায় ১০ বিঘা জমির ভূট্টা, সরিষা, বোরোধানের চারাসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়টি কৃষি সম্প্রাসরণ অধদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।

রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা সীমান্তের দায়িত্বরত জামালপুর ৩৫ ব্যাটালিয়নের এডি শামছুল হক সাংবাদিকদের জানান, বন্য হাতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কৃষকের অনেক ফসলের ক্ষতি করে। এ জন্য সীমান্তবর্তী বাংলাদেশি কৃষকসহ এলাকাবাসীদের সর্বদা সতর্ক থাকতে ও ঢাকঢোল, টিন বাজিয়ে হাতির দলকে তাড়িয়ে দেয়া পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

জামালপুর ৩৫ ব্যাটালিয়নের এডি শামছুল হক আরো জানান, বন্য হাতির তাণ্ডবের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে এ সমস্যা নিরসন করার প্রচেষ্টা চলছে।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –