• বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ১৭ ১৪৩১

  • || ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

হরিজনদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে লালমনিরহাটের ডিসি  

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২৩  

হরিজনদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে লালমনিরহাটের ডিসি             
হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার লালমনিরহাট শহরের হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ।

হরিজনদের রেস্টুরেন্টে ঢুকতে না দেওয়ায় তারা রাস্তার ওপর বসে খাবার খাওয়ার দৃশ্য দেখে হতবাক হন জেলা প্রশাসক। তিনি রেস্টুরেন্ট মালিকদের জানিয়ে দেন হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষজন রেস্টুরেন্টে বসে খাবার গ্রহন করবেন এবং কেউ তাদের বাঁধা দিতে পারবেন না।

জেলা প্রশাসক হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষজনকে বলেন, ‘আপনারা রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খাবেন।’ হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন রেস্টুরেন্টে প্রবেশের সাহস পাচ্ছেন না। কারন রেস্টুরেন্টে ঢুকলে তাদেরকে মারধর করা হতে পারে।


রেস্টুরেন্টে ঢুকে খাবার খেতে না দেওয়ায় হরিজনরা রাস্তার ওপর বসে খাবার গ্রহন করায় মানবাধিকার চরমভাবে লংঘিত হচ্ছে। এ সংক্রান্ত বিষয় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নজরে এনেছেন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ ৪ জানুয়ারী বুধবার এ ব্যাপারে সরেজমিন তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসককে।  

লালমনিরহাট শহরের স্টোরপাড়া হরিজনন কলোনীর কিরররণ রানী বাঁশফোর (৩৫) বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক তাদেরকে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে তারা খুশি হয়েছেন কিন্তু সাহস পাচ্ছেন না। রেস্টুরেন্টে ঢুকলে রেস্টুরেন্টের মালিক ও তার কর্মচারীরা মারধর করবেন বলে তিনি জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লালমনিরহাট শহরে এক রেস্টুরেন্ট মালিক বলেন, জেলা প্রশাসক বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘হরিজনরা এখন থেকে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার নিবেন। কেউ তাদেরকে বাঁধা দিতে পারবেন না।’  ”জেলা প্রশাসক স্যারের উদ্দ্যোগ খুবই ভালো। আমরাও চাই হরিজনরা সকলের মতো রেস্টুরেন্টে বসে খাবার গ্রহন করুক। কিন্তু সমাজের মানুষ এটা চান না,’ তিনি বলেন। “আমার রেস্টুরেন্টে হরিজনরা ঢুকে খাবার খেলে অন্য কাস্টমাররা আর এখানে আসবেন না। এতে আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে,’ তিনি বলেন। “এ সমস্যা বহুদিনের। এজন্য সামজের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধীরেধীরে এ সমস্যার অবসান হবে’ ।

বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের লালমনিরহাট জেলা ইউনিটের সাধারন সম্পাদক ঘুগলু বাবু বাঁশফোর বলেন, জেলা প্রশাসক বৃহস্পতিবার সকালে শহরের রেস্টুরেন্টগুলো পরিদর্শন করেছেন। হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে কথা বলেছেন। “আমরা নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করছি। আমরা সাহস করে রেস্টুরেন্ট ঢুকে খাবার খাওয়া শুরু করবেন। এতে হয়তো আমাদেরকে মারধর করা হতে পারে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, রেস্টুরেন্ট মালিকরা হরিজনদের রেস্টুরেন্টে ঢুকে খাবার খেতে না দিলে তাদের বিরুদ্ধে মতবিনিময় করার ব্যবস্থা করছি,’ তিনি বলেন। “ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠি, নারী পুরুষভেদ অথবা জন্মস্থান নিয়ে যাতে কোন বৈষম্য ও মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে আমরা সজাগ রয়েছি,’ তিনি বলেন।

– দৈনিক পঞ্চগড় নিউজ ডেস্ক –